লন্ডনে বসবাসরত ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পর্বতারোহী আকি রহমানের লক্ষ্য স্কুলের জন্য ১০ হাজার পাউন্ড সংগ্রহ করা। করোনাকালে স্কুলটির তহবিল সংগ্রহ থমকে গিয়েছিল, তাই আকির এই উদ্যোগ।
আকি রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে। তিনি লন্ডনে বাঙালি পর্বতারোহী হিসেবে বেশ পরিচিত। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে তিনি ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বত মাউন্ট এলব্রুসে (১৮,৫১০ ফুট) উঠেন এবং যুক্তরাজ্যের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। এর আগে, জুলাই মাসে তিনি আফ্রিকার সবচেয়ে উঁচু পাহাড় কিলিমাঞ্জারো (১৯,৩৪১ ফুট) জয় করেন।
আকি পশ্চিম ইউরোপের মঁ ব্লাঁ (১৫,৭৭৪ ফুট) পর্বতেও আরোহন করেছেন। এই সমস্ত অভিযানের পেছনে তার মূল লক্ষ্য ছিল ওয়েস্টউড ওল্ডহ্যাম হাই স্কুলের জন্য তহবিল গড়া। এই স্কুলটি ২০১২ সালে মুসলিম মেয়েদের পড়াশোনার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। আকি ইতিমধ্যেই ৫,০০০ পাউন্ড সংগ্রহ করেছেন। করোনাকালে থমকে যাওয়া তহবিল সংগ্রহ পুনরুজ্জীবিত করতে আকির এই প্রচেষ্টা।
আকি বলেন, “পর্বতারোহী হওয়ার স্বপ্ন আমার ছোটবেলা থেকেই। এলব্রুস জয়ের জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করেছিলাম। ১৫ সেপ্টেম্বর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিই এবং ১৭ সেপ্টেম্বর জানতে পারি আমি পজিটিভ। তারপর বাড়িতে আইসোলেশনে থাকি এবং ৫ অক্টোবর সুস্থ হয়ে উঠি। দুদিন পর ৭ অক্টোবর এলব্রুসে ওঠার জন্য রাশিয়া রওনা হই। ৮ অক্টোবর স্থানীয় সময় রাত একটায় চূঁড়ায় উঠি। অভিযান শুরুর পর ৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে।”
তিনি আরো বলেন, “পাহাড়টি খুবই খাড়া। তবে আসল সমস্যা হলো উচ্চতা। আমরা সব মেনে নিয়ে হাঁটলাম, হাঁটলাম আর হাঁটলাম। একসময় নিজেকে চূঁড়ায় খুঁজে পেলাম।”
২০২০ সালের ২২ জুলাই আকি তানজানিয়ার আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত কিলিমাঞ্জারো জয় করেন। এর সাত দিন পর মঁ ব্লাঁ জয় করেন।
আকি রহমান ১৯৮৪ সালে মাত্র ১৭ মাস বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে আসেন। তিনি ওল্ডহ্যামে বসবাস করেন এবং সেখানকার বিজনেস ম্যানেজমেন্ট স্কুল থেকে বিজনেস ইনফরমেশন টেকনোলজিতে ২০০১ সালে পড়াশোনা শেষ করেন। আকি নিয়মিত তার জগন্নাথপুরের বাড়িতে বেড়াতে যান।
এই ব্লগ পোস্টে আকি রহমানের পর্বতারোহণের গল্প এবং তার তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগটি তুলে ধরা হয়েছে। এটি একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প, যা আমাদের দেখায় কিভাবে সংকল্প ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করলে সফলতা অর্জন করা যায়।